Posted on 16th September, 2021
Indian newspaper The Telegraph headlined “Neros Dine…as Gujrat Model reaches Delhi” after the communal violence in the Indian capital killed dozens (February 2020). Photo: E-paper version of The Telegraph
আমি নানান সময়ে বলে ফেলি যে নাকি আমার নানান বিষয়ে মৌলিক জ্ঞান আছে,আমার অমুক বিষয়ে ফান্ডামেন্টাল নলেজ আছে,ওনার ফান্ডা এ ব্যাপারে দুর্ধর্ষ,অথবা, শুনি উনি নাকি অমুক বিষয়ের মূল ধরে নাড়া দিয়েছেন,মনে করি আমার ঘড়িটাই একমাত্র ঠিকঠাক চলছে,অন্যের ঘড়ি ভুলভাল। অথচ আমি নাকি মৌলবাদী নই.ফান্ডা থাকলেও ফান্ডামেন্টালিস্ট নই,কেননা আমি তো জ্ঞানের ফাউন্ডেশন ধরে ফেলেছি!আমাদের এই নিজস্ব মৌলবাদ নিয়েই অন্যদের বলি মৌলবাদী। আমাদের এইসব না-খেয়াল-করা মৌলবাদের বিপ্রতীপে পাড়া যায় নাকি কোনো সহিষ্ণুতার রাজনীতির কথা? নিরীশ্বর অনেকান্তাবাদের অনুষঙ্গে কয়েকটা অনেকান্ত (ন+এক+অন্ত) লীলেখেলার প্রস্তাব রাখছি ইয়ে যাকে বলে রুলস অফ দি গেম(স): ১. মনোভঙ্গিমা/মনোপ্রতিন্যাসগত লীলেখেলা: আপনার মতামত আমার পছন্দ নয়, কিন্তু তা বলে আপনাকে “বর্জন” নয়, আপনাকে “ত্যাগ” দেওয়া নয়, আপনার মতামতকে একটি বৈধ “সম্ভাবনা” ধরে নিয়ে “স্বীকৃতি” (=লেজিটিমেট পসিবিলিটি) দিয়ে শুধু বলবো, “আমি আপনাকে অস্বীকৃতিগ্রহণ (ন+স্বীকৃতি+গ্রহণ) করলাম।” আর যদি মতে মেলে তাহলে অবশ্যই স্বীকৃতিগ্রহণ করবো আর সেটাই কমিটমেন্ট! এটা সহিষ্ণুতার রাজনীতির প্রথম পাঠ । ২. পদ্ধতিগত লীলেখেলা বা তক্কো করার তরিকা :(ক) অন্যের মতামত, যাকে বলবো “পূর্বপক্ষ”, খন্ডন না করে কেউ স্বপক্ষ বা “উত্তরপক্ষ” বা নিজ-মতামত ব্যক্ত করতে পারবেন না।(খ) নানান বিষয়ে নানানভাবে ঝগড়া হতেই পারে, তবে শ্রেষ্ঠ ঝগড়া হলো গিয়ে “বাদ”: শুধুমাত্র তত্ত্বজিজ্ঞাসার জন্য হারাজেতাহীন সংলাপ; মাঝারিমাপের ঝগড়ায় হারাজেতার ব্যাপার থাকে–সে ঝগড়ার নাম “জল্প”; আর ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে, খিস্তিখেউড় করে, পরস্পর মাথাফাটি করে ঝগড়ার নাম “বিতন্ডা”। “জল্প” আর “বিতন্ডা”-কে অস্বীকৃতিগ্রহণ (ন+স্বীকৃতি+গ্রহণ) করলাম। এমন প্রতর্কনির্ভর সংলাপী সমাজ বানাতে আমরা রাজি আছি কি?অর্থাৎ ডায়ালগের বদলে অনেকান্ত পলিলগ? ৩. ধরা যাক ক, খ, গ–এই তিনটে প্রতিযোগী বা পরস্পরবিরোধী তত্ত্ব অথবা উপকল্প (হাইপোথেসেস) আছে কোনো এক বিষয়ে। চেষ্টা করবো এইসব প্রতিযোগী বা বিরোধী তত্ত্বের মার্জিনস অফ এররস বের করে ক দিয়ে খ-এর পুনরবলোকন, গ দিয়ে খ-এর ইত্যাদি। বাতিল করবো না কাউকে ফালতু বলে, কিন্তু পূর্ণ সত্যের বা মিথ্যের দাবি উঠলেই তাকে এড়িয়ে যাবো, কেননা আমি তো একটাই পূর্ণ সত্য জানি যে পূর্ণ সত্য বলে কিস্সু নেই! [ কমুনিসরা আলিপুর জেলে বন্দি। হঠাৎ ভূমিকম্পে কারাগারের প্রাচীর গেলো ভেঙে। কমুনিসরা মিটিং-এ বসলেন। প্রশ্ন: “এ সময় জেল ছেড়ে পালানো প্রতিবিপ্লবী প্রতিক্রিয়াশীল কাজ হবে নাকি তা বিপ্লবে ইন্ধন দেবে ?” তক্কো শেষ হবার অনেক আগেই ‘কল্যাণকামী’ রাষ্ট্র পাঁচিল বানিয়ে ফেললো!] # এইরকম কিছু লেখাপত্তর, আমার ভাবনা, এখানে সাজিয়ে দিলুম।(সবকটা নীলরাঙা শিরোনাম হাইপারলিঙ্কড–ছুঁলেই খুলে যাবে!)
· নাস্তিক্য, মৌলবাদ আর অনেকান্ত Atheism, Fundamentalism and Anekantavada · Foregrounding Fundamentalism, Foreclosing Fundamentalism · বাজারী মৌলবাদ আর ধম্মের মৌলবাদ: প্রমুখবন্ধ আর প্রমুখন · ধর্ম ও জনসংস্কৃতি প্রসঙ্গে [On Religion and Popular Culture] · “Little Boxes: (Il)logic(s) of Truth-Room(s)” · “ছোট বাক্স, ছোট বাক্স: (অ-) সত্য ঘরের (অ-)যুক্তি ‘Little Boxes: (Il)Logic(S) of Truth-Room(S)’ ” ·ভারতীয় সংস্কৃতি ও অনেকান্ত বেদান্ত: ভাষ্য (A Commentary on Indian Culture and Anekanta Vedanta) · “Chomsky and Habermas via Nyaya Theory of Debating”. · আমার বলে রইল না আর কিছু ? [What do We have Left to Imagine?] · “জিজ্ঞাসাপাঠ”( Philosophy of Science[s] for teens) · “শেষ মহাআখ্যান [Last Metanarrative]. · হায় রাম! · Scraps on Indian Atheism
সংযোজনঃ
Paradox of tolerance বা সহনশীলতার কূটাভাস।।
এই কূটাভাসের প্রবক্তা কার্ল পপার (The Open Society and Its Enemies, ১৯৪৫)।
ব্যাপারটা এই অসময়ে বোঝা জরুরি, বিশেষ করে আমার ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে যখন বন্ধু আর রক্তীয়বিচ্ছেদ অনিবার্য হয়ে উঠছে মতাদর্শগত কারণে–।
ধরুন, আপনি একজন নাস্তিক/নিরীশ্বর/ না-ধার্মিক মানে ইউরোপীয় অর্থে সেক্যুলার (not religious, not spiritual)। আপনার অন্যতম স্বলক্ষণ পরমতসহিষ্ণুতা।
ধরা যাক (এক্সট্রিম কেস এটা) আপনি সহিষ্ণুতার রাজনীতির প্রথম পাঠ নিয়ে ফেলেছেন অনেকান্তবাদ থেকে বা ফেয়ায়াবেন্ডের বহুত্ববাদী পদ্ধতি থেকে। আপনার কারোর মতামত পছন্দ/যুক্তিগ্রাহ্য নয়, কিন্তু তা’ বলে তাকে আপনি “বর্জন” করতে রাজি নন। কাউকে “ত্যাগ” দেওয়া নয়, বরং মতামতকে একটি বৈধ “সম্ভাবনা” ধরে নিয়ে “স্বীকৃতি” (=লেজিটিমেট পসিবিলিটি) দিয়ে শুধু বলেন, “আমি আপনাকে অস্বীকৃতিগ্রহণ (ন+স্বীকৃতি+গ্রহণ) করলাম।বর্জন করছি না, কেননা বর্জনের পেছনে অসহিষ্ণু হিংস্রতা আছে। আর যদি হারাজেতাহীন যুক্তিতক্কের (ন্যায়দর্শনে যাকে বলে “বাদ”) সাহায্যে আপনার সঙ্গে মতে মেলে তাহলে অবশ্যই স্বীকৃতিগ্রহণ করবো আর সেটাই আমার কমিটমেন্ট!”
এবার আপনার “কারোর মতামতপছন্দ/যুক্তিগ্রাহ্য নয়” এমন কারোর সঙ্গে দেখা হলো। তিনি ধরুন, হিটলার থেকে শুরু করে ট্রাম্প-মোদি-দিদি বা অন্য কোনো ন্যাতার সমর্থক। এক বিশেষ ধর্মীয় গোষ্ঠী সম্পর্কে ফোবিয়া আছে।জাতপাতের ব্যাপারে ছুঁৎমার্গিতা আছে। মজদুরদের ব্যাপারে অসহনশীল এবং তাদের সম্পর্কে কদর্য উক্তি করতে তাঁর বাঁধে না।আপনার সঙ্গে তারপর শেয়ারবাজার নিয়ে আলোচনা শুরু করলো।এদিকে আপনি “Occupy Wall/Dalal Street”-এর সমর্থক। আপনি এনার কাছে বাদের (বিতণ্ডা নয়) মানে বুঝিয়ে “বাদ”-ভিক্ষে করলেন।উনি পাত্তাও দিলেন না।
এবার এনাকে নিয়ে আপনি কি করবেন? এনার সঙ্গে সহিষ্ণুতার রাজনীতি করবেন? নাকি অসহিষ্ণু হয়ে তাকে ত্যাগ দেবেন?নাকি ঘরে যত্নআত্তি করে রাখবেন। পপার বলবেন, অপার সহিষ্ণুতা সহিষ্ণুতাকেই ধ্বংস করে।অসহিষ্ণুকে এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়লে ১০ ফিট জায়গা দখল করে বসে।
“Unlimited tolerance must lead to the disappearance of tolerance. If we extend unlimited tolerance even to those who are intolerant, if we are not prepared to defend a tolerant society against the onslaught of the intolerant, then the tolerant will be destroyed, and tolerance with them. — In this formulation, I do not imply, for instance, that we should always suppress the utterance of intolerant philosophies; as long as we can counter them by rational argument and keep them in check by public opinion, suppression would certainly be unwise. But we should claim the right to suppress them if necessary even by force; for it may easily turn out that they are not prepared to meet us on the level of rational argument, but begin by denouncing all argument; they may forbid their followers to listen to rational argument, because it is deceptive, and teach them to answer arguments by the use of their fists or pistols. We should therefore claim, in the name of tolerance, the right not to tolerate the intolerant.” ( The Open Society and Its Enemies-এর সপ্তম অধ্যায়ের নোট ৪ দেখুন। ২৯২ পাতা। Routledge Classics)
এবার বলুন তো কি করা যায়? এই কূটাভাস-বিষয়ে আপনাদের পরামর্শ চাইছি। এই ফ্যাসিস্ট আবহাওয়ায় আমি আপনাদের কাছে “বাদ”-ভিক্ষে করছি।
[বাদ-বিষয়ে কয়েকটা কথাঃ পদ্ধতিগত লীলেখেলা বা তক্কো করার তরিকা : (ক) অন্যের মতামত, যাকে বলবো “পূর্বপক্ষ”, তাকে খণ্ডন না করে কেউ স্ব-পক্ষ বা “উত্তরপক্ষ” বা নিজ-মতামত ব্যক্ত করতে পারবেন না। (খ) নানান বিষয়ে নানানভাবে ঝগড়া হতেই পারে, তবে শ্রেষ্ঠ ঝগড়া হলো গিয়ে “বাদ”: শুধুমাত্র তত্ত্বজিজ্ঞাসার জন্য হারাজেতাহীন সংলাপ। মাঝারিমাপের ঝগড়ায় হারাজেতার ব্যাপার থাকে–সে ঝগড়ার নাম “জল্প”—বিচারক বিচার করে ঠিক করেন ঠিক-বেঠিক;; আর ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে, খিস্তিখেউড় করে, পরস্পর মাথাফাটি করে ঝগড়ার নাম “বিতন্ডা”।]
Comments